ছবি: সংগৃহীত

অষ্টমবারের মতো রেকর্ড ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার জিতেছেন আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। লড়াইটা হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি, নরওয়েজিয়ান গোলমেশিন খ্যাত আর্লিং হাল্যান্ডও মেসির সমান ৪৮ পয়েন্ট পেয়েছেন। তবুও গত মৌসুমের ট্রেবল জয়ীকে টপকে বর্ষসেরা হিসেবে নির্বাচিত হন মেসি। এখন প্রশ্ন হতে পারে, দু’জনের পয়েন্ট সমান হলেও কীভাবে ‘দ্য বেস্ট’ জিতলেন মেসি?

মূলত কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক ও দর্শকদের ভোটে নির্বাচিত হন ‘ফিফা দ্য বেস্ট’। প্রথম স্থানের জন্য ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয় স্থানের জন্য ৩ ও তৃতীয় স্থানের জন্য ১ পয়েন্ট বরাদ্দ। মেসি সবচেয়ে বেশি ৫ পয়েন্ট পেয়েছেন, যার মানে সবচেয়ে বেশি প্রথম স্থানের জন্য ভোট পেয়েছেন, যে কারণে টাইব্রেকারের পর তিনিই হয়েছেন প্রথম। ফিফা দ্য বেস্টের ইতিহাসেও এই প্রথম দু’জন একই পয়েন্ট পেলেন।

ফিফার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে হাল্যান্ডের তুলনায় এগিয়ে ছিলেন মেসি। আর্জেন্টাইন মহাতারকা পেয়েছেন ১৩ পয়েন্ট (৬৭৭ পয়েন্ট স্কোর), অন্যদিকে হাল্যান্ডের পয়েন্ট ১১ (৫৫৭ পয়েন্ট স্কোর)।কোচদের পছন্দের তালিকায় আবার এগিয়ে ছিলেন নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। সেখানে হাল্যান্ড পেয়েছেন ১৩ পয়েন্ট (৫৪১ পয়েন্ট স্কোর) এবং মেসির নামের পাশে ১১ পয়েন্ট (৪৭৬ পয়েন্ট স্কোর)।

ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচিত সাংবাদিকদের ভোটেও এগিয়ে ম্যানসিটির গোলমেশিন।
গণমাধ্যম কর্মীদের ভোটে হাল্যান্ড পেয়েছেন ১৩ পয়েন্ট (৭২৯ পয়েন্ট স্কোর) ও মেসি ১১ পয়েন্ট (৩১৫ পয়েন্ট স্কোর)। সমর্থকদের ভোটে এগিয়ে ছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা। সেখানে মেসি পেয়েছেন ১৩ পয়েন্ট (৬১৩২৯৩ পয়েন্ট স্কোর), অন্যদিকে হাল্যান্ডের ভাগে ১১ পয়েন্ট (৩৬৫৮৯৩ পয়েন্ট স্কোর)।

সব মিলিয়ে মেসি ও হাল্যান্ডের নামের পাশে পয়েন্ট সমান ৪৮। ব্যবধান না থাকায় ফলাফল নির্ধারিত হয় ফিফার ‘রুলস অব অ্যালোকেশন’- এর ১২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী। সেখানে উল্লেখ আছে, পয়েন্ট সমান হলে জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে প্রথম পছন্দে এগিয়ে থাকা প্রতিযোগীর হাতে উঠবে বর্ষসেরার পুরস্কার। সে হিসেবে এবারের ‘দ্য বেস্ট’ নির্বাচিত হয়েছেন মেসি।

জাতীয় দলের অধিনায়ক সন হিউইং মিন, ভার্জিল ফন ডাইক, অ্যান্ড্র রবার্টসন, মোহামেদ সালাহ, রবার্ট লেভানদোভস্কি, হ্যারি কেইনরা ভোট দিয়েছেন মেসিকে। এমনকি মেসিকে ভোট দিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের দুইজন জাতীয় দলের অধিনায়ক ক্রোয়েশিয়ার লুকা মদ্রিচ ও উরুগুয়ের ফেদে ভালভের্দেও। বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াও তার ভোট দিয়েছেন মেসিকে। অবশ্য বাংলাদেশের কোচ হাভিয়ের ক্যাবরেরা তার ভোট দিয়েছেন হাল্যান্ডকে। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অধিনায়ক নন পর্তুগালের, তাই তিনি ভোট দেননি। পর্তুগালের অধিনায়ক পেপে অবশ্য প্রথম ভোট দিয়েছেন বার্নার্দো সিলভাকে। হাল্যান্ডকে প্রথম ভোট দিয়েছেন ব্রাজিল অধিনায়ক ক্যাসেমিরো। অন্যদিকে মেসি তার প্রথম ভোট দিয়েছেন হাল্যান্ডকে, এরপর এমবাপ্পেকে। ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট তার প্রথম ভোট দিয়েছেন হাল্যান্ডকে।

প্রশ্ন উঠেছে মেসি কেন নিজে পুরস্কার নিতে লন্ডনে যাননি। আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম জানিয়েছে, মেসি নতুন মৌসুমে ইন্টার মায়ামির হয়ে অনুশীলন শুরু করেছেন। তিনি এল সালভাদরের সাথে শুক্রবার প্রীতি ম্যাচ খেলতে চান, কিন্তু লন্ডনে এলে সব মিলে তিন চার দিন চলে যাবে, তাই সেই ম্যাচে তার থাকা হতো না। এসব কিছু চিন্তা করেই মেসি ফিফা দ্য বেস্টে ছিলেন না।